Add

Add

আজ অনেকদিন পর আবার লিখছি। হ্যাঁ, এমন অদ্ভুত ঔদাসিন্যে আমি লিখতে বসিনা অনেকদিন হলো। নিজের সাথেই নিজের যুদ্ধ হয়, অবশেষে নির্বিকার সত্বা জয়ী হয় লেখকসত্ত্বার উপরে। লেখনী পড়ে থাকে মনের চিপায়, তারপর একদিন মনের ঝড়ো হাওয়ায় হারিয়ে যায়। আর নির্বিকার সত্ত্বা তিলে তিলে খুন করে অনুভূতির প্রাণকে। 

জীবন যুদ্ধের ফাঁকে ফাঁকে

তবু আজ লেখক সত্ত্বা জয়ী হলো এক তীব্র যন্ত্রণার শক্তিতে। যন্ত্রনা আবার কী? আমার যন্ত্রণারাই অমন। যুক্তির অভাবে যখন আত্মার জখমগুলো আমাকে খুবলে খুবলে খায়, তখন আমার যন্ত্রণা হয়। কীসের যুক্তি? হয়তবা যখন চাঁদের আলোকে হারানোর, অথবা রোদের আলোর মাঝে হারিয়ে যাওয়া, অথবা দিগন্ত পেরিয়ে কোন পাতার মর্মরধ্বনির মাঝে হারিয়ে যাওয়ার পরেও অনুভূতিরা বাঁধন-হারা রয়ে যায়, তখন ফিরে আসে অযৌক্তিক কাব্যের পুনরালোচনা। ব্যর্থ কাব্য আর ব্যর্থ জীবনানুভূতির অপপ্রয়াণ আছে এই দুঃস্বাপ্নিক ব্যবধানের ত্রিমাত্রিক অভিক্ষেপে।

এইসব লেখার অর্থ থাকতে নেই। আমি শত-সহস্রবার বলেছি, আমার লেখনীতে নতুন কোন সংযোজন নেই অনুভূতির, ভালোবাসার, শব্দের। সেই কবে রবিদা, জীবনানন্দদা, কাজীদাকে পড়েছিলাম! আল মাহমুদ, হেলাল হাফিজকে পড়াও হলো অনেকদিন… আমার অনুভূতির গহবরগুলোতে যেই বাধা দেয়া আছে, সেটা পেরিয়ে কোথা থেকে আসবে আমার হৃদয়ের আলো!! দুঃসময়ে আমার যৌবন গুমরে মরেছে তন্দ্রায় আর আত্মখেদে, প্রত্যাবর্তনের লজ্জায় আমি মুখ ঘসে ঘসে আড়ষ্টমনে ভুলেছি অপমানের লজ্জা।

আমি বুঝি অপমানের লজ্জায় গুমরে মরি সহসাই, নিরবতায়? কেন এখনো প্রতিটি শব্দ আমার কষ্টগুলোকে ভিজিয়ে দিয়ে যায়? কেন এই গরলগুলোকে এঁকে এঁকে তুলে দিই আমি আমার লেখায়? আমি জানিনা। জীবনের একটা অর্থ খুঁজবো বলে বেরিয়েছিলাম ঘর ছেড়ে। পুস্তকের পর পুস্তক ঘেঁটে তাঁকে চিনেছি, যিনি আমাকে তাঁর ভালোবাসায় সিক্ত করেছেন অনাদিকাল থেকেই। কিন্তু, কী করে আমি তার কাছে ফিরে যাবো? উত্তর খুঁজে পেতে এই আত্মাকে করতে হবে সহিষ্ণু, প্রত্যয়ী। আমি তো অস্থির!

আমার অস্থিরতাই আমার অপেক্ষাকে হত্যা করে। আমার আর অপেক্ষার ইচ্ছে নেই। আমার আর নেই কলতানের প্রতি ভালবাসা। আমি খুব তীব্র করে অনুভব করি এই স্পন্দনের মাঝে বিকট এক ক্রোধ। নিজের শ্বদন্ত দেখে নিজেই হতচকিত হই। এখানে একসময় ফুল ফুটতো, এখানে জোছনা রাতে জোছনা জলে স্নাত হবার ব্যাপার ছিলো, এখানেই একসময় ছিলো হেমন্তের রোদের স্নিগ্ধ আলোয় নিজেকে ধন্য করার স্বপ্ন। আশ্চর্য!! স্বপ্ন কাকে বলে? অনাদিকাল থেকে আত্মাকে শূণ্যতা দিয়ে পূর্ণ করার নামকেই, তাইনা?

আমি নিঃশব্দ আর্তনাদের মুখরিত মনের জনলোকালয়ের ধ্বংসাবশেষে দাঁড়িয়ে খুঁজে পেতে চাইছিলাম আগামীর কোন সম্ভাবনাকে। হয়ত এভাবে স্তব্ধ অপেক্ষার অর্থ হয়না, জীবনকে রক্ষা করতে ছুটে চলা দরকার অন্য কোন আলোর সন্ধানে, শহরের খোঁজে। অথচ আমি হতভম্ব এই ধ্বংসের শহরে খুঁজে ফিরি ছেলেবেলার অপেক্ষার মায়াকে, হয়ত তাতে কোন আশা ছিলো।

অপেক্ষার সবচাইতে সুন্দর জিনিস ছিলো, তাতে আশাবাদী থাকা যেত। হয়ত রিক্তকালের প্রাপ্তির পুর্ব পর্যন্ত তাতে ভালোবাসা সিক্ত হবে বলেই কল্পনা করা হয়। হয়ত কোনদিন দিগন্তজোড়া সবুজের মাঝে বুক ভরে শ্বাস নেয়া হবেনা, হবেনা কোন রাতের বাতাসে কন্ঠ ছেড়ে গান গেয়ে ইতস্তত রাতের ভ্রমণ। তবু, সবকিছুতেই এক অপপ্রয়াণ, অপমানবতা, অপভ্রংশ। কেন এমন বৈকল্য জীবনময়?

0 comments Blogger 0 Facebook

Post a Comment

 
BD Health © 2016. All Rights Reserved. Design By Novera
Top