Add

Add

এসইও তে লিংক বিল্ডিং এর যুগ কি আসলেই শেষ?? 
গুগলের লেটেস্ট আপডেটগুলো এসইওতে যে অনেক বড় ধরণের প্রভাব ফেলেছে সেটি আর নতুন করে বলার দরকার নাই। এই আপডেটগুলোর পরে অনেকে যারা নিজেদের সাইটকে সার্চ ইঞ্জিন রেজাল্ট পেইজের কোথাও খুজে পান নাই বা এখনো পাচ্ছেন না কিংবা যারা অনলাইন মার্কেটপ্লেসে এসইও লিংক বিল্ডিং এর কাজ নিয়ে টেনশনে আছেন তারা অনেকেই এখন হয়ত  চিন্তা করতেছেন এসইও করে আর ভাত নাই, এসইও এর দিন শেষ। কিন্তু অন্যদিকে যাদের এই আপডেটগুলো সম্পর্কে সঠিক আইডিয়া আছে এবং যারা গুগলের সঠিক গাইডলাইন মেনে এসইও করেছেন এবং এখনো করছেন তারা ভাল করেই জানেন এসইও কোনোভাবেই শেষ হয়ে যায়নি বরং আগের চাইতে অনেক বেশি স্মার্ট একটি প্রফেশান। এখন আগের চাইতে অনেক অল্প পরিশ্রমে অনেক ভাল কাজ করা যায়, কিছুটা মাথা খাটানোর ব্যাপার আছে এই!!

এসইও এবং লিংক বিল্ডিং

links1
এসইও নিয়ে অন্তত যাদের টুকটাক কিছু অভিজ্ঞতা আছে তারা ভাল বলতে পারবেন এই কিছুদিন আগেও প্রায় অনেকেই মনে করত যে এসইও মানে হচ্ছে লিংক বিল্ডিং আর লিংক বিল্ডিং মানেই হচ্ছে এসইও। তখন শুধুমাত্র গুগলকে টার্গেট করে একটা ওয়েবসাইটের জন্য হাজার হাজার ব্যাকলিংক তৈরি করা হত। যে সাইটে বেশি পরিমাণ লিংক থাকত সেই সাইটগুলোই গুগলের সার্চের টপে থাকার সম্ভাবনা থাকত এবং শুধু সম্ভাবনা না এটা হতোই। কাজেই এরকমটি মনে করার যথেষ্ট কারণও ছিল, যে কারণে সবাই শুধু ব্যাকলিংক আর ব্যাকলিংক বুঝত। মনে করত বেশি বেশি ব্যাকলিংক তৈরি করতে পারলেই কাজ শেষ, আর কি লাগে! যার ভয়ানক ফলাফল পাওয়া গেল কিন্তু যখন গুগল একটার পর একটা নতুন নতুন আপডেট যোগ করা শুরু করল এবং এই আপডেটগুলোর কারণে যখন অনেকে কড়া পেনাল্টি খেয়ে বসল। তখন সবার একটু টনক নড়ে গেল যে এটা কি হল, গুগল এটা কি করল?
গুগল খারাপ কিছুই করেনি, বরং আমাকে আপনাকে আরেকটু আপডেট করার চেষ্টা করল এই। আমাদেরকে বুঝানোর চেষ্টা করল যে শুধুমাত্র লিংক বিল্ডিংই এসইও নয়, ন্যাচারাল এবং মানসম্মত ওয়েতে লিংক বিল্ডিং করার পাশাপাশি আরো অনেক ভাল স্ট্র্যাটেজি ফলো করতে হবে যে কারণে শুধুমাত্র গুগলের কাছে নয়, আপনার টার্গেটেড ভিজিটরদের কাছেও আপনার সাইটটিকে ভালভাবে ফোকাস করতে পারবেন এবং তাদের কাছে আপনার সাইটের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরতে পারবেন।

তাহলে কি লিংক বিল্ডিং এর গুরুত্ত্ব এখনো আছে??   

link-building-lesson
একটু অন্য প্রসঙ্গে যাই- আমি বৌদ্ধ ধর্মের অনুসারী যেটাকে অন্যভাবে বললে বলা যায় কর্মবাদ ধর্ম। ধর্মজ্ঞান কম থাকলেও যতদূর জানি গৌতম বুদ্ধ ছিলেন অন্যতম বড় একজন দার্শনিক মাপের মানুষ। একটা কথা সবসময় বলতেন যে শুধুমাত্র আমাকে পূজা করে বা বিপদের সময় আমাকে স্মরণ করলে তোমাদের লাভের লাভ কিছুই হবেনা। আমাকে পূজা করে সময় নষ্ট না করে আমার দেখানো পথটা অনুসরণ করার চেষ্টা করো, সফলতা পাবে। কথাটা কিন্তু মানতে পারেন আর না পারেন আমার কাছে মনে হয় ১০০ ভাগ সত্যি এবং এফেক্টিভ যেটা অনেকটা গুগলের ক্ষেত্রেও বলা যায়।
গুগল কি বলেছিল কখনো যে আমার জন্য এসইও কর বা আমাকে খুশি করার জন্য এসইও কর? হয়ত বলে নাই কিন্তু আমরা সবাই এক ধরণের ঘোরের মধ্যে ছিলাম, যে কারণে গুগল ছাড়া কিছুই বুঝতাম না বা গুগলের চিন্তা কখনোই মাথা থেকে ঝাড়তে পারতাম না। আর সে কারণেই শুধুমাত্র গুগলকে টার্গেট করে সাইটের জন্য হাজার হাজার ব্যাকলিংক করে গেছি। আমাদের সাইটকে গুগল সার্চ রেজাল্ট পেইজের টপে দেখার জন্য কত ধরণের পদ্ধতিতে যে লিংক বিল্ডিং করেছি তার কোনো ঠিক নাই, যেখানেই একটু চান্স পাইছি আগ-পিছ চিন্তা না করেই লিংক বসিয়ে দিছি। যে কারণে আমরা পেনাল্টি খেয়েছি মূলত গুগলের কাছেই, গুগলের আপডেটগুলোর কাছে নয়।
এবার আসি আমার মূল প্রসঙ্গ লিংক বিল্ডিং নিয়ে। গুগল একটার পর একটা আপডেট যোগ করার পরপরই যখন অনেক ওয়েবসাইটের হাজার হাজার লিংক অকেজো হয়ে গেলো এবং অনেক ওয়েবসাইট সার্চ রেজাল্টে খুজেই পাওয়া গেলনা তখন অনেকেই বলল যে লিংক বিল্ডিং এর দিন শেষ, এসইও এর জন্যে আর লিংক বিল্ডিং এর দরকার নাই, লিংক বিল্ডিং করে আর এসইও করা যাবে না হেন-তেন অনেক কিছু।
কিন্তু না, এসইওতে লিংক বিল্ডিং শেষ হয়ে যায়নি। এটি এখনো সাইটকে গুগলের টপে নিতে অনেক শক্তিশালী ভূমিকা রাখতে পারে এবং আপনার সাইটের জন্যে কোয়ালিটি সম্পন্ন বা ন্যাচারাল লিংক বিল্ডিং এর প্রয়োজন এখনো আছে। তবে হ্যাঁ, আগের মত একচেটিয়া বাজেভাবে ব্যাকলিংক তৈরি করা বা তথাকথিত সেই লিংক বিল্ডিং এর দিন আর নেই, এটি এখন মৃত।

কিভাবে করব লিংক বিল্ডিং

seo-link-building
গুগলের যত আপডেট সেগুলোর মূল টার্গেটই হচ্ছে লিংক বিল্ডিং স্ট্র্যাটেজি এবং আগের সেই তথাকথিত বাজে লিংক বিল্ডিং এর কারণেই মূলত অনেক সাইট গুগলের পেনাল্টি খেয়ে বসে আছে। তাই “হাউ ডু আই বিল্ড লিংক” এভাবে চিন্তা না করে “হোয়াট ইজ আ গুড লিংক” এভাবে চিন্তা করার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। তবেই আপনি ভাল মানের লিংক এর  গুরুত্ত্ব বুঝতে পারবেন এবং সেভাবে লিংক বিল্ডিং করতে পারবেন।

এবার সহজভাবে দেখে নিই কেমন হওয়া উচিত ভাল মানের লিংক এর বৈশিষ্ট্য

  • যে সাইটের সাথে আপনার সাইটের লিংক বিল্ডিং করছেন সেটা অবশ্যই রিলেটেড হতে হবে। অর্থাৎ আপনার সাইটটি যদি হয় গ্রাফিক্স রিলেটেড আর আপনি যদি রেস্টুরেন্ট রিলেটেড সাইটের সাথে লিংক বিল্ডিং করেন তাহলে সেটি মোটেও গ্রহণযোগ্য হবে না।
  • লিংকটি ভিজিটরদের কাছে গুরুত্ত্বপূর্ণ হতে হবে। আপনি যে লিংকটি দিয়ে আসলেন সেখানে গিয়ে ভিজিটররা যদি তাদের প্রয়োজনীয় ভাল  কিছু না পাই তাহলে সেই লিংকটির গুগলের কাছে বা ভিজিটরদের কাছে কতটা গুরুত্ত্ব থাকে??
  • আপনার লিংকটি ভিজিটরদের জন্যে অবশ্যই ক্লিকেবল হতে হবে এবং লিংকটি এমন হতে হবে যাতে ভিজিটররা সহজে বুঝতে পারে যে এটা তাদের জন্য এবং এখান থেকে তারা ভাল কিছু পাবে।
  • ব্লগ কমেন্টিং বা ফোরাম পোস্টিং এর মাধ্যমে অনেক এফেক্টিভ লিংক পাওয়া যায়। তাই বলে আন্দাজে ব্লগে বা ফোরামগুলোতে কমেন্ট করতে যাবেন না। ধরুন কোনো ব্লগে ওয়েব ডিজাইন নিয়ে ভাল একটা পোস্ট দেয়া হয়েছে এবং সেখানে অনেক পাঠক কমেন্ট করতেছে। এখন আপনি যদি অনেক কমেন্ট দেখে সেখান থেকে ভিজিটর পাওয়ার আশায় এসইও টিপস সম্পর্কে কমেন্ট করে লিংক বসিয়ে দিয়ে আসেন সেটা অবশ্যই স্পামিং হয়ে যাবে। কারণ তারা সেখানে ওয়েব নিয়ে আলোচনা করতেছে এসইও নিয়ে নয়।  তাই আপনার কমেন্টগুলো হতে হবে মোস্ট রিলেটেড।
  • আপনার সাইটের মধ্যে যখন ইন্টারন্যাল লিংক দিবেন তখন খেয়াল রাখবেন যাতে লিংক এর সাথে আপনার কনটেন্টগুলোর সামঞ্জস্য থাকে।
  • বর্তমানে লিংক বিল্ডিং করার সবচেয়ে এফেক্টিভ পদ্ধতি হচ্ছে গেস্ট ব্লগিং। যথেষ্ট পরিমাণ পাঠক আছে বা ভাল ভিজিটর পাওয়া যাবে এরকম গেস্ট ব্লগিং সাইটগুলোতে রেগুলার পোস্ট করতে হবে এবং সেখানে আপনি চাইলে সাইটের লিংক দিতে পারবেন। আগে হয়ত শুধুমাত্র র‍্যাংকিং বাড়ানোর জন্যে ফেইক লিংক বা ফেইক ব্লগের সাথে লিংকিং করা যেতো কিন্তু এখন সেভাবে করা যায় না। গেস্ট ব্লগিং এর জন্যে যথেষ্ট পরিমাণ ভিজিটর বা পাঠকদের অ্যাক্টিভিটি  সম্পন্ন ব্লগসাইটগুলোকে অনেক বেশি গুরুত্ত্ব দেয়া হয়।  মোটকথা লিংক বিল্ডিং হতে হবে ভিজিটরদের জন্যে “নট ফর গুগল”। লেখার শুরুতেও বলেছি এখনো বলছি গুগলের চিন্তা আপাতত মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলতে না পারলে বিপদ আছে। সারাক্ষণ যদি গুগল নিয়ে চিন্তা করতে থাকেন, কিভাবে গুগলের টপে যাওয়া যায়, কিভাবে গুগল সার্চ রেজাল্টের ফার্স্ট পেইজে থাকা যায় তাহলে ভিজিটরদের নিয়ে চিন্তা করার সময় পাবেন না। আর ভিজিটরদের জন্যে পারফেক্ট এসইও করতে না পারলে গুগলের টপে যাওয়ার চিন্তা না করাটাই বেটার।

গুগল কি বলে?

go
গুগল কি বলে বা গুগল কি চাই সেটা নিয়ে চিন্তা না করে আগে ভাবুন গুগল কেন আছে এবং গুগলের মেইন উদ্দেশ্য কি? ভিজিটররা যাতে তাদের টার্গেটড কী-ওয়ার্ডগুলো ব্যাবহার করে  গুগলে সার্চ দিয়ে সবচেয়ে ভাল ওয়েবসাইটটি খুজে পায় সেটাই কি গুগলের মেইন উদ্দেশ্য নয়? গুগল সবসময় চাই ভিজিটরদের জন্যে তাদের প্রয়োজনীয় তথ্যগুলোকে আগে রাখতে যাতে সার্চ দেয়ার সাথে সাথে আমরা আমাদের দরকারী সাইটগুলো পেয়ে যায়। অর্থাৎ ভিজিটরদের চাহিদা পূরণ করতে পারাই হচ্ছে গুগলের মেইন টার্গেট।

এবার আসুন সর্টকাটে দেখি একটা ওয়েবসাইটের জন্যে এসইও করতে হলে গুগল কি ধরণের গাইডলাইন ফলো করতে বলে

১. ওয়েবসাইটের মধ্যে অপ্রাসঙ্গিক কনটেন্ট বা আর্টিকেল ব্যাবহার করার কোনো প্রয়োজন নাই। অর্থাৎ আপনার সাইটের মোস্ট রিলেটেড কনটেন্ট ব্যাবহার না করে যদি আপনি অন্যান্য বিষয় নিয়ে আপনার ওয়েবপেইজটি ভরে রাখেন তাহলে ভিজিটররা আপনার সাইটে এসে অবশ্যই বিরক্ত বোধ করবে এবং দ্বিতীয় বারের জন্যে আর সাইটে আসতে চাইবে না।
২. সাইটের মধ্যে ইউনিক কনটেন্ট ব্যাবহার করতে হবে। সেই কনটেন্টগুলো হতে পারে ইউনিক কোনো ভিডিও, ছবি, আর্টিকেল ইত্যাদি অনেক কিছু। কারণ আপনার সাইটের ভিতরের কনটেন্টগুলোর কারণেই তো ভিজিটররা আসবে। এখন আপনার ম্যাক্সিমাম কনটেন্ট যদি অন্য কোথাও থেকে কপি করা হয় তাহলে সেটি না গুগল না ভিজিটর, কারো কাছেই গ্রহণযোগ্য হবে না এবং এভাবে সাইটের প্রতি ভিজিটরদের বিশ্বস্ততা না থাকাই স্বাভাবিক।
৩. একই বিষয়বস্তু নিয়ে ওয়েবসাইটের মধ্যে অযথা সাবডোমেইন বানানোর কোনো প্রয়োজন নাই। একটি পেইজের মধ্যে যদি আপনার সার্ভিসটাকে ফোকাস করার যথেষ্ট সুযোগ থাকে তাহলে শুধু শুধু আরেকটি পেইজ তৈরি করে একই সার্ভিস যোগ করতে যাবেন না।
৪.স্যোসিয়াল মিডিয়াতে ভাল অ্যাক্টিভিটি তৈরি করতে হবে। আগে যেহেতু এসইও করতে গিয়ে সবাই শুধুমাত্র লিংক বিল্ডিং নিয়ে বেশি মাথা ঘামাতো তখন বিভিন্ন স্যোসিয়াল সাইট যেমন Digg, Stumble upon, Yahoo ইত্যাদি সাইটগুলোর সাথে লিংকিং করা হতো। কিন্তু এখন আর এসবের গুরুত্ত্ব নাই বললেই চলে। এখন স্যোসিয়াল মিডিয়া ব্যাবহার করতে হয় আপনার সাইটের কনটেন্টগুলোর প্রমোশনের জন্যে। অর্থাৎ Facebook, Google plus, Twitter, LinkedIn ইত্যাদি সাইটগুলোতে আপনার সাইটকে প্রমোশন করার মাধ্যমে সাইটে ভিজিটর বাড়াতে হবে।
আমি অনেক সর্টভাবে লিখে আপনাদের বেসিক ধারণা দেয়ার চেষ্টা করলাম। কতটুকু সফল হলাম জানিনা, তবে এটুক বলতে যে এই লেখাতে চিরাচরিত লিংক বিল্ডিং এর ক্লিয়ার ধারণা দেয়ার জন্য আমি আমার সাধ্যমত চেষ্টা করেছি।
সবশেষে যেটা বলতে চাই সেটা হল কোনোভাবেই সার্চ ইঞ্জিনগুলোকে টার্গেট করে সাইট বানাতে যাবেন না বা লিংক বিল্ডিং করতে যাবেন না। যথাসম্ভব ভিজিটরদের নিয়ে ভাবুন, কিভাবে ভিজিটররা আপনার সাইটের প্রতি আকৃষ্ট হতে পারে এবং কিভাবে তারা আপনার সাইট থেকে ভাল বেনিফিট পেতে পারে সেই অনুযায়ী সাইটের কাজ করুন এবং সেভাবেই লিংক বিল্ডিং করুন। যদিও লিংক বিল্ডিং এর গুরুত্ত্ব এখনো আছে তারপরও লিংক বিল্ডিং নিয়ে অযথা মাথা ঘামানোর দরকার নাই এবং এটি নিয়ে আতংকিত হওয়ার কোনো কারণ নাই। সবসময় মনে রাখবেন কোয়ান্টিটি নয়, কোয়ালিটিই হচ্ছে মূল বিষয়।
 এসইও নিয়ে অনেক গুরুত্ত্বপূর্ণ তথ্য বা সমস্যা সমাধানের জন্যে নিচের ফেসবুক গ্রুপগুলোতে জয়েন করতে পারেন: https://www.facebook.com/groups/blackiz.itinstitute/ 

0 comments Blogger 0 Facebook

Post a Comment

 
BD Health © 2016. All Rights Reserved. Design By Novera
Top